এ বর্বরতার উপযুক্ত বিচার না হলে, অপরাধীরা প্রশ্রয় পেয়ে যাবে
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ৫০ বছর বয়সী আব্দুর রশিদ ও তার ২০ বছর বয়সী পুত্রবধূ সালমা বেগমকে প্রথমে প্রচন্ড পেটানো হয় আর তারপর মাথা ন্যাড়া করে সারাগ্রাম ঘুরিয়েছে স্থানীয় মাতব্বররা। শিবগঞ্জ সদর থেকে ২০-২৫ কিলোমিটার দুরে মাঝিহট্ট ইউনিয়নের সৈয়দ দামগারা গ্রামে গত ২৯ এপ্রিল রোববার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা নাকি শ্বশুর-পুত্রবধু হয়ে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত।
পুলিশের ভাষ্যমতে,আব্দুর রশিদের ছেলে ট্রাকের হেলাপার জাকির মন্ডল ৭ মাস আগে বিয়ে করে ঘরে আনেন আদমদিঘী উপজেলার সালমাকে। ট্রাকের হেলপার হ্ওয়ায় জাকিরকে প্রায়ই বাইরে থাকতে হতো আর এ সুযোগে গ্রামের কিছু বখাটে নববধূকে উত্যক্ত করতো। কু-প্রস্তাব দিতেও তারা পিছপা হয়নি।
ইতিমধ্যেই সালমা বিষয়টি তার স্বামী জাকিরকে জানিয়েছিল আর তা নিয়ে জাকিরের সঙ্গে বখাটেদের বাদানুবাদও হয়। এরপর থেকেই ওই পরিবারকে সমাজে হেয় করার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল ওই বখাটেদের দল। ইতিমধ্যেই ওই পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিয়েছে কিছু মাতব্বর।
এ ঘটনায় জের ধরে ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় ওই গ্রামের মাতববর মো. ওবায়দুল্লাহ (৫০), ইছাহাক আলী (৩২), রজিব উদ্দিন (৪০) জাহিদুল ইসলাম (৩৫), ধলু মুন্সিসহ (৩৮) কমপক্ষে ৩০/৩৫ জন আব্দুর রশিদের বাড়িতে জোরপুর্বক সালিশ বসায়। শ্বশুর-পুত্রবধূ অবৈধ সর্ম্পকের সাজানো অভিযোগ তুলে বিচারে উভয়কে লাঠি দিয়ে বেদম পিটায়। এরপর সবাই মিলে কিলঘুষি। এতে তারা দুই জন প্রচন্ড ব্যথায় কাতরাতে থাকলেও তাদের মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করা হয় এবং টাক মাথায় কালি মেখে পুরো গ্রাম ঘোরানো হয়। পরে উল্লাস করতে করতে টেনে হিচড়ে তাদের ত্রিমোহনী এলাকায় নিয়ে রাস্তার পাশে বেধে রাখে। রাত ১০ টার দিকে পুলিশ আসছে শুনে শালিসকারিরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আব্দুর রশিদের ছোট ভাই আব্দুল জলিল বাদি হয়ে গ্রাম্য মাতববর শালিসকারি ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ১৫ জন কে আসামী করে মোট ৩৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আমার কথা ভালো লাগবে এমন নাও হতে পারে
ভালো না লাগলে কী ও কেন ভালো লাগেনি
উল্লেখ করে কমেন্ট করুন
আর ভালো লাগলে তো জানাতেই পারেন